সিনেটে বিলটি আটকে যাওয়ায় অবৈধ অভিবাসী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে
ডিসেম্বর 11, 2010 এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান
মার্কিন সিনেটে আটকে গেল ড্রিম অ্যাক্ট!
আজকাল ডেস্ড়্গঃ মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে গত বুধবার অভিবাসীদের বৈধতাসংক্রান্ত একটি বিল অনুমোদিত হয়েছিল। ‘ড্রিম অ্যাক্ট’ নামের এই বিলটি সিনেটে পাসের জন্য উত্থাপিত হয় বৃহস্পতিবার। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল এই বিল নিয়ে। কিন্তু এই আশার প্রদ্বীপ নিভু নিভু। বৃহস্পতিার এই বিলটি পাশ হয়নি। বিলটির পড়্গে কমপড়্গে ৬০জন সিনেটের ভোট প্রয়োজন ছিল। এদিন এই বিলের পড়্গে ৫৭ সিনেট ভোট দিয়েছের এবং এর বিপড়্গে ভোট দিয়েছেন ৪০জন সিনেটর। এমনি অবস্থায়ও সিনেটরদের আপত্তি না থাকলে আলোচনা অব্যাহত রেখে বিল পাশের নজির রয়েছে। কিন্তু এই বিল যেন পাশ না হয়-এমন আপত্তিও উঠেছে। ফলে বিলটি আলোর মুখ দেখবে কিনা-এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তবে এই ড্রিম অ্যাক্ট বিল নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে এই বিল আলোচনাপূর্বক পাস না হলে তা আর পাস না হবার সম্্ভবনা কম। কারণ, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্টতা লাভ করায় জানুয়ারি মাস থেকে প্রতিনিধি পরিষদ চলে যাবে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণে। বদলে যাচ্ছে স্পীকারও। সাধারণতঃ রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানরা অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার পড়্গে মতামত ব্যক্ত করেন না। তারা বরাবরই এ ধরনের বিলের বিরোধীতা করে আসছেন। বৃহস্পতিবার সিনেটে উত্থাপিত ড্রিম অ্যাক্ট বিলের বিরোধীতাকারী সিনেটের মধ্যে রিপাবলিকানদের পাশাপাশি ডেমোক্রেট সিনেটারও ভোট দিয়েছেন। ফলে বিলটি আটকে যায় সিনেটে। বিলটি পাসের সম্্ভাবনা দেখে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১৩ লাখের বেশি অবৈধ ছাত্র-ছাত্রী বৈধ হবার স্বপ্ন দেখছিলেন। এই বিলে অবৈধ ছাত্র-ছাত্রীদের বৈধ করার সুযোগ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। বুধবার প্রতিনিধি পরিষদে এই বিলটির পড়্গে ২১৬ এবং বিপড়্গে ১৯৮ ভোট পড়েছিল। রিপাবলিকান দলের আটজন আইনপ্রণেতা (কংগ্রেসম্যান) দলীয় অবস্থানের বিপরীতে বিলটির পড়্গে ভোট দিয়েছিলেন। আবার ডেমোক্রাটদের ৩৮ জন আইনপ্রণেতাও ওই বিলের বিপড়্গে ভোট দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। প্রতিনিধি পরিষদে ৮ রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যানের ভোট প্রাপ্তিতে ধারনা করা হচ্ছিলো বিলটি নিয়ে রিপাবলিকান শিবিরে সমর্থন বেড়েছে। তাই অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সিনেটে বিলটি আটকে যাওয়ায় অবৈধ অভিবাসী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। একই কারণে হতাশা ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
কী আছে ড্রিম অ্যাক্টে?
ড্রিম অ্যাক্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় যেসব অবৈধ অভিবাসীর বয়স ১৬ বছরের কম ছিল, তারাই এ আইনের আওতায় আসবে। যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ বছর বা বেশি সময় থেকে বসবাসরত, হাইস্ড়্গুল গ্র্যাজুয়েট বা সমমানের শিড়্গা গ্রহণকারীরাই বৈধতার সুযোগ নিতে পারবে। এই আইনের আওতায় আবেদনের পরিপ্রেড়্গিতে পাঁচ বছরের জন্য শর্ত সাপেড়্গে বৈধতার সনদ দেওয়া হবে। পাঁচ বছর পর আবেদনকারী আরও পাঁচ বছর মেয়াদের জন্য আবেদন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে এসব আবেদনকারীকে কমপড়্গে দুই বছরের জন্য উচ্চশিড়্গা নিতে হবে অথবা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হবে। প্রাথমিক এসব প্রক্রিয়ার পর স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে হবে। প্রতিনিধি পরিষদে বিল পাসের পর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এ বিলটি মেধাবী কিছু তরম্নণদের পড়্গে, যারা যুক্তরাষ্ট্রকে সেবা দিতে চায়। তার মানে, বিলটি যুক্তরাষ্ট্রেরও পড়্গে।’ বিলের সমর্থক আইনপ্রণেতারা বলছেন, বিলটি আইনে পরিণত হলে কয়েক লাখ অভিবাসী উপকৃত হবে। এ আইনের আওতায় অপেড়্গাকৃত তরম্নণ এবং শিড়্গার্থী অভিবাসীরাই বৈধতার সুযোগ নিতে পারবে। প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা স্টেনি হোয়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যে ধরনের অভিবাসী চায়, বিলটি সেই ধরনের অভিবাসীরই পড়্গে।’ রিপাবলিকানদের পড়্গ থেকে বলা হয়, এই বিলের মাধ্যমে আইন ভঙ্গকারীদের মদদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। রিপাবলিকান নেতা লামার স্মিথ বলেন, ড্রিম অ্যাক্ট বিল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুঃস্বপ্ন। দেশে যেখানে বেকারত্বের হার প্রায় ১০ শতাংশ, সেখানে আইন লঙ্ঘনকারীদের বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাব আরও ড়্গতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।